Sunday, 25 September 2016

বাউল গগন হরকরা

বাউল গগন হরকরা নাম শুনেছেন কখনো? একটা  বিখ্যাত গান আছে...."আমি কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যে রে"
পুরো নাম গগনচন্দ্র দাম. ১৮৪৫ সালে কুষ্টিয়া শিলাইদহে কায়স্ত পরিবারে জন্ম। তিনি শিলাইদহের পোস্ট-অফিসে ডাক-হরকরার কাজ করতেন। এ পেশার সুবাদেই তিনি লোকের কাছে ‘গগন হরকরা’ নামে পরিচিতি লাভ করেন।

তাঁর রচিত ‘আমি কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যে রে।/হারায়ে সেই মানুষে, তার উদ্দেশে দেশ বিদেশে বেড়াই ঘুরে \’ কুঠিবাড়িতে গগনের কণ্ঠে এ গানটি শুনে রবীন্দ্রনাথ মুগ্ধ হন। চিঠি বিলি করার জন্য গগন প্রায়ই রবীন্দ্রনাথ এর কাছে আসতেন এই সময় রবীন্দ্রনাথ গগন এর কাছ থেকে লালন সহ  আরো অনেক বাউল গান শুনতেন।  এ থেকে বুঝা যায় রবীন্দ্রনাথ এর বাউল প্রীতি ছিল প্রখর। বাংলা ১৩২২ সালে রবীন্দ্রনাথ তার একটি ম্যাগাজিন এ গগন হরকরার গান লিপিবদ্ধ করেন।কথিত আছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ছোট গল্প "দা পোস্টমাস্টার" গগন হরকারাকে নিয়েই লিখেছিলেন।পরে এই গল্প অনুসারে সত্যজিৎ রায় একটি সিনেমা তৈরী করেন।

রবীন্দ্রনাথ এর ভক্ত ও শিষ্য দের মুখে শুনা যায় যে রবীন্দ্রনাথ তার "আমার সোনার বাংলা" গান টি গগন সরকারের "আমি কোথায় পাব তারে  আমার মনের মানুষ যেরে " থেকে অনুপ্রাণিত। "আমার সোনার বাংলা গান টি ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ সময়ে রচিত হয়. পরে বাংলাদেশ  ১৯৭১ সালে স্বাধীন হবার পর তা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে রূপ লাভ করে. আমার সোনার বাংলা ছাড়াও রবীন্দ্রনাথ অসংখ গান বাউল সুরে লিখেছেন। 


তবে এখন দেখা যায় অনেকেই বলে কবিগুরুর নাকি সুর কপি করেছে।বুঝে বলে নাকি না বুঝে বলে আমার জানা নাই। 

Wednesday, 11 November 2015

Dhaka Commerce College

সময়টা কিছুটা পূর্বের, ঢাকা কমার্স কলেজে পড়াকালীন সময়ের কথা।
মিরপুর বাসি হওয়ার সুবিধার্থে কলেজ এ পৌছাইতে খুব একটা সময় লাগত না। রিক্সা অথবা বাসে করেই ইজিলি অল্প সময়ের ভিতরে কলেজের গেট বন্ধের পূর্বেই কলেজে পৌঁছা যেত। মাঝে মধ্যে বাস বা রিক্সা খুঁজে না পেলে ৩/৪ জন মিলে সি এন জি করেও কলেজে যেতাম। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে অামরা কখনো নিজে ইচ্ছা করে সি এন জি কে ডাক দেয় নি।তারা নিজের ইচ্ছাতেই আমাদের কাছে এসে বলতেন মামা জাবেন??
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে কিছু কিছু সি এন জি মামারা আমাদের কাছ থেকে ভাড়া নিতে চাইতেন না। আর যারা আমাদের কাছ থেকে ভাড়া নিত তাদেরকেও আমরা আহামরি কোন টাকা দিতে হত না। প্রায় বাস ভাড়ার সমতুল্য টাকা দিয়েই আমরা যাতায়েত করতাম। এর রহস্য অবশ্যই একদিন উন্মোচিত হয়েছিল।
প্রতিদিনকার মত সকাল সকাল কলেজে যাবার উদ্দেশ্যে বের হয়, দিনটা ছিল খুব সম্ভবত সোমবার।কারন সোমবারের দিন অামাদের চিড়িয়াখানা রোডে বাস পেতে প্রবলেম হত। প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে আমরা বাসের জন্য দাড়িয়ে ছিলাম।সচরাচর বাস যখন থাকে না তখন রিক্সারও সংকট সেখা দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে এক সি এন জি মামা এসে বলল মামা যাবেন নাকি?? যেহেতু অনেকক্ষণ ধরে দাড়িয়ে ছিলাম তাই অামরাও কিছু চিন্তা ভাবনা না করে সি এন জি তে উঠে পরি। পথিমধ্যে সি এন জি মামা হঠাৎ বলে উঠলেন "বুচ্ছ মামারা তোমাদের এই কমার্স কলেজ এ অামার এক ভাতিজা পড়ত, ও এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ে। তোমাদের এই কমার্স কলেজ আমার ভাতিজার জীবন টা পাল্টাইয়া দিসে। আমার ভাতিজাটারে একটা লাইনে উঠাইয়া দিসে।"
অবশেষে কলেজ এ পৌঁছে ভাড়া দিবার সময় উনিও আমাদের কাছ থেকে কোন ভাড়া নেন নি। উল্টো বলে "তোমরা তো আমার ভাতিজার মত তোমগোর কাছ থেইকা ভাড়া নিমু কেন??"
যারা কমার্স কলেজ এ পড়েছে আশা করি তারা ডরমিটরি সম্পর্কে কিছুটা হলেও জান। ডরমিটরিতে আর্থিক ভাবে কিছুটা অসচ্ছল কিন্তু মেধাবি এরকম ছাত্রদের থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে। তাদের থাকা খাওয়া সম্পূর্ন খরচ কলেজ বহন করে থাকে।এমনকি তাদের বিনামূল্যে বই ও প্রাভেট পড়ার সুযোগ সুবিধা রয়েছে।যেহেতু কলেজ এই ওদের থাকতে হয় সেহেতু কলেজ এর টিচারদের সাথে তাদের সবসময় যোগাযোগ থাকে।যার ফলে তারা সঠিক গাইডলাইনটা খুব সহজেই পেয়ে থাকে। আমার মনে হয় তারা ঐ ডরমিটরিতে থাকা কালীন ই বুঝে যায় যে তারা জীবনে কিছু একটা হবে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে ঢাকা কমার্স কলেজ কিন্তু তাদের কার্যক্রম এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে না/ এইচ এস সি পরিক্ষার পরে তাদের প্রতি খেয়াল আরো বাড়িয়ে দেয়। এমনকি ভার্সিটি এডমিশন টেস্ট এর জন্য কোচিং এ ভর্তির ব্যাবস্তাও কলেজ এর শিক্ষকরা করে দিত। মানে মাটি থেকেএকটা ছেলেকে কিভাবে আকাশে উঠানো যায় সেটা কমার্স কলেজ ভাল করেই জানে ।কি ভাবসেন কমার্স কলেজ এখানেই থেমে গেছে, না আজীবন এই কমার্স কলেজ এই ছেলেগুলুর খুজখবর রাখে।তারা কখন কি করছে সব সময় তাদের খেয়াল রাখে।এক কথা মানুষ গড়ার কারিগর হচ্ছে আমাদের এই ঢাকা কমার্স কলেজ।
সেই প্রানের কলেজ থেকেই কিছুদিন পূর্বে রজত জয়ন্তি ও জি পি এ ৫ দের সংবর্ধনার জন্য আমাদের আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। যদিও এই সংবর্ধনার অনুষ্ঠানটি আর এক বছর আগে হওয়ার কথা ছিল। এই নিয়ে অবশ্যই কলেজ এর প্রতি আমাদের একটু মান অভিমান ছিল।তবে আমন্ত্রন মেসেজটি পাওয়ার পরে আমাদের সব মান অভিমান এক নিমিষে শেষ হয়ে গেছে।হয়ত তারা এমন একটা দিনের অপেক্ষাই ছিলেন তাই আমাদের সংবর্ধনা দিতে একটু দেরি করেছেন। ও ভাল কথা উক্ত অনুষ্ঠানটি কিন্তু ৭ই নভেম্বর ২০১৫ সকাল ৮ টা থেকে শুরু হবে।
আশা করছি ৭ তারিখ আমরা সবায় আবার আমাদের কলেজ লাইফে ফিরে যাব।
ধন্যবাদ।